ব্যবসায়ী পরিবারে জন্ম নেওয়া বালকটির ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলা আর শরীরচর্চায় আগ্রহ ছিল। বাবার পেশা আর স্কুলের পড়ালেখা—কোনোটাই তাঁকে আকৃষ্ট করতে পারেনি। এমনই ক্রীড়ামোদী ছিলেন যে ১৫ বছর বয়সেই ইলিনয়েস রাজ্যের হাইস্কুল পর্যায়ে দীর্ঘ লম্ফের রেকর্ডের পাশে নিজের নাম লিখে ফেলেন। কুস্তি, মুষ্টিযুদ্ধ থেকে শুরু করে মাছ ধরা ছিল ছেলেটির নেশা। শহরবাসীর ধারণা, খেলাধুলা ছাড়া এই ছেলেকে দিয়ে কিছুই হবে না। কিন্তু সবাইকে চমকে দিয়ে ‘বানানে দুর্বল’ ছেলেটি দিব্যি স্কুলের শ্রেণী পার করে দেয়। আরও চমকের সৃষ্টি হয়, যখন শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত, দর্শন ও জ্যোতির্বিদ্যা পড়া ছেলেটি তৎকালীন আমেরিকার বিখ্যাত রোডস স্কলারশিপ নিয়ে ব্রিটেনে পড়তে যায়। অদ্ভুত মেজাজের এই ছেলেটির নাম হচ্ছে ‘এডুইন পাওয়েল হাবল’।
কর্মজীবনের শুরুতে এডুইন হাবল শিক্ষকতা করলেও আইন-ব্যবসাসহ বাস্কেটবল দলের কোচের দায়িত্ব পর্যন্ত পালন করেন। এমনকি প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশ নিয়ে পিএইচডি ডিগ্রির সঙ্গে মেজর র্যাংক পর্যন্ত বাগিয়েছিলেন, আর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জিতে নেন সামরিক খেতাব ‘লিজিয়ন অব মেরিট’। ১৯১৯ সালে তিনি ক্যালিফোর্নিয়া মাউন্ট উইলসন মানমন্দিরে কাজ শুরু করেন। তাঁর প্রকাশিত গবেষণাকর্ম (১৯২৫) ‘মহাবিশ্ব সম্প্রসারণশীল তত্ত্ব’ ও ‘সৌরজগতের মিল্কিওয়ে ছাড়াও অজস্র গ্যালাক্সি উপস্থিত’ ধারণা প্রমাণ করে। ১৯৩৫ সালে তিনি একটি গ্রহাণুও শনাক্ত করেন। তাঁর দুটি বিখ্যাত বই হচ্ছে The Observational Approach to Cosmology ও The Realm of the Nebulae। ১৮৮৯ সালে জন্ম নেওয়া এই মার্কিন জ্যোতির্বিদ পোশাক-আশাকে আজীবন ব্রিটিশ ভাবাদর্শে ছিলেন। হাবল জ্যোতির্বিদ্যা ও জ্যোতি-পদার্থবিদ্যা পদার্থবিজ্ঞান থেকে আলাদা বিজ্ঞানের একটি অংশ বলে মনে করতেন। তাঁর কীর্তির কারণেই নোবেল পুরস্কার কর্তৃপক্ষ ১৯৫৩ সালে তাঁর মৃত্যুর পর জ্যোতির্বিদদের নোবেল পুরস্কার উন্মুক্ত করে। মহাবিজ্ঞানী আইনস্টাইনের রাজত্বে জন্ম নেওয়া এডুইন হাবলকে বিজ্ঞানে অবদানের স্বীকৃতি না দিতে পেরে পুরস্কার কর্তৃপক্ষ দুঃখ প্রকাশ করেছিল। বর্তমান সময়ের আরেক বিখ্যাত জ্যোতির্বিদ স্টিফেন হকিং তাঁর A Brief History of Time গ্রন্থে হাবলকে ‘বিংশ শতাব্দীর মেধাবীদের একজন’ বলে স্বীকার করেছেন। জ্যোতির্বিদ্যাকে আলাদা একটি বিষয় হিসেবে গড়ে তোলায় তিনি অবিস্মরণীয়। মহান এই জ্যোতির্বিজ্ঞানীর স্মরণে নাসা ১৯৯০ সালে মহাকাশে ২ দশমিক ৪ মিটার লম্বা ‘হাবল টেলিস্কোপ’ প্রেরণ করে।
জাহিদ হোসাইন
সূত্র:প্রথম আলো, 01/07/2011
কর্মজীবনের শুরুতে এডুইন হাবল শিক্ষকতা করলেও আইন-ব্যবসাসহ বাস্কেটবল দলের কোচের দায়িত্ব পর্যন্ত পালন করেন। এমনকি প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশ নিয়ে পিএইচডি ডিগ্রির সঙ্গে মেজর র্যাংক পর্যন্ত বাগিয়েছিলেন, আর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জিতে নেন সামরিক খেতাব ‘লিজিয়ন অব মেরিট’। ১৯১৯ সালে তিনি ক্যালিফোর্নিয়া মাউন্ট উইলসন মানমন্দিরে কাজ শুরু করেন। তাঁর প্রকাশিত গবেষণাকর্ম (১৯২৫) ‘মহাবিশ্ব সম্প্রসারণশীল তত্ত্ব’ ও ‘সৌরজগতের মিল্কিওয়ে ছাড়াও অজস্র গ্যালাক্সি উপস্থিত’ ধারণা প্রমাণ করে। ১৯৩৫ সালে তিনি একটি গ্রহাণুও শনাক্ত করেন। তাঁর দুটি বিখ্যাত বই হচ্ছে The Observational Approach to Cosmology ও The Realm of the Nebulae। ১৮৮৯ সালে জন্ম নেওয়া এই মার্কিন জ্যোতির্বিদ পোশাক-আশাকে আজীবন ব্রিটিশ ভাবাদর্শে ছিলেন। হাবল জ্যোতির্বিদ্যা ও জ্যোতি-পদার্থবিদ্যা পদার্থবিজ্ঞান থেকে আলাদা বিজ্ঞানের একটি অংশ বলে মনে করতেন। তাঁর কীর্তির কারণেই নোবেল পুরস্কার কর্তৃপক্ষ ১৯৫৩ সালে তাঁর মৃত্যুর পর জ্যোতির্বিদদের নোবেল পুরস্কার উন্মুক্ত করে। মহাবিজ্ঞানী আইনস্টাইনের রাজত্বে জন্ম নেওয়া এডুইন হাবলকে বিজ্ঞানে অবদানের স্বীকৃতি না দিতে পেরে পুরস্কার কর্তৃপক্ষ দুঃখ প্রকাশ করেছিল। বর্তমান সময়ের আরেক বিখ্যাত জ্যোতির্বিদ স্টিফেন হকিং তাঁর A Brief History of Time গ্রন্থে হাবলকে ‘বিংশ শতাব্দীর মেধাবীদের একজন’ বলে স্বীকার করেছেন। জ্যোতির্বিদ্যাকে আলাদা একটি বিষয় হিসেবে গড়ে তোলায় তিনি অবিস্মরণীয়। মহান এই জ্যোতির্বিজ্ঞানীর স্মরণে নাসা ১৯৯০ সালে মহাকাশে ২ দশমিক ৪ মিটার লম্বা ‘হাবল টেলিস্কোপ’ প্রেরণ করে।
জাহিদ হোসাইন
সূত্র:প্রথম আলো, 01/07/2011